রাজশাহীর আম না হলে যেন মধু মাস মানায়-ই না। কারণ রাজশাহীর আমের খ্যাতি এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই ভোক্তাদের কেমিক্যালমুক্ত পরিপক্ক আমের নিশ্চয়তা দিয়ে গাছ থেকে পাড়ার সময় বেঁধে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
৩মে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত মনিটরিং সংক্রান্ত সভায় আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছরের সব ধরনের গুটি জাতের আম নামানো যাবে আগামীকাল ৪ মে থেকে। আর উন্নতজাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রাণীপছন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৫ মে থেকে পাড়া যাবে। এছাড়া ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি ও ১০ জুন আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ পাড়া যাবে। আর ১০ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম এবং ২০ আগস্ট ইলামতি আম আসবে বাজারে। এছাড়া বারোমাসি হিসেবে পরিচিত কাটিমন ও বারি আম-১১ সারা বছরই সংগ্রহ করা যাবে। তবে নির্ধারিত সময়ের আগে আম বাজারে পেলে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। কারও বাগানে নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পাকলে তা প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, রাজশাহীর ঐতিহ্য হচ্ছে আম। বাজারে পরিপক্ব ও নিরাপদ আম নিশ্চিত করতে প্রতিবছরই রাজশাহীতে তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এবারও সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে তারিখ ঠিক করা হয়েছে। এর আগে যদি কোনো মালিকের আম গাছে পেকে যায় তাহলে তাকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে গাছ থেকে পাড়তে পারবেন। এরপর বাজারজাত করতে পারবেন। তিনি আরো জানান, হাটগুলোতে সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনাররাও বিষয়টি দেখভাল করবেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মোজদার হোসেন জানান, বাজারে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে হবে।
রাজশাহীতে এ বছর ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮৬টি আম গাছ রয়েছে। এবার জেলায় ৯৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল। গত বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। এবার বাগান বেড়েছে এক হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে। এ বছর হেক্টর প্রতি ১৩ দশমিক ২০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট দুই লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ টন আম উৎপাদন হবে। এর মধ্যে ৩০০ টন আম বিদেশে রফতানির আশা করছি।
Leave a Reply