কাফি পারভেজ, জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুরের প্রাথমিক টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) সুপারের বিরুদ্ধে চরম অনিয়ম,দুর্নীতির ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, জামালপুর পিটিআই সুপার হোসনে আরা বেগম যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে পিটিআই চত্বরে প্রায় কয়েক কোটি টাকা মুল্যে সরকারী কোয়াটারে বসবাস না করে, হোষ্টেলে বসবাস করে বাড়ি ভাড়া কর্তন না করে প্রতিমাসে উত্তোলন করে আত্মসাত করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া তিনি পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের স্লিপের টাকাসহ অনুদানের দুই লাখ টাকা নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে অবশিষ্ট টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকরা জানায়, পুরাতন বিল্ডিং ভাঙ্গার অজুহাতে পিটিআই চত্ত্বরের পুরাতন গাছ,পুরাতন আসবাবপত্র, খাতা, ড্রাম, ব্যাটারী বিক্রি করে সে টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাত করছেন।
অপরদিকে অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়োগকৃত এমএলএসএস সাব্বির ও শাহিদুর দুইজন চাকুরী ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলেও গত ২০২০ইং সাল থেকে তাদের বেতন নিয়ম বহিভূত ভাবে উত্তোলণ করার অভিযোগ রয়েছে। সরকারী বিধি অনুযায়ী দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে (অনিয়মিত) শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার না দিয়ে তিনি মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে ভোলা জেলার বাসিন্দা আরিফ ও সাথী নামে দুইজনকে বাবুচী পদে এবং ঝাড়ুদার/পিয়ন পদে শেরপুর জেলার বাসিন্দা সুফিয়াকে নিয়োগ করে,তাদের সামান্য বেতন দিয়ে অবশিষ্ট অর্থ তসরূপ করে যাচ্ছেন।
শুধু তাই নয়, সুপার হোসনে আরা ট্রেনিং নিতে আসা প্রাথমিক শিক্ষকদের এক প্রকার জিম্মি করে বিভিন্ন অজুহাতে অর্থিক সুবিধা নিয়ে থাকেন। এ নিয়ে শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে একাধিকবার আন্দোলন করতে দেখা গেছে। এছাড়া আইসিটি ট্রেনিং শিক্ষার্থীদের খাবার ভাতা থেকে উন্নয়নের নামে কর্তন করে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন অভিযোগ ভুক্তভোগিদের। তার এমন কার্য্যক্রম প্রতিবাদ করার সাহস টুকু কারো নেই। প্রতিবাদ করতে গেলে তার প্রভাবশালী আত্মীয়দের দিয়ে ভয়ভীতিসহ হেনেস্থার স্বীকার হতে হয় বলে নাম প্রকাশে অনি”ছুক একাধিক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
সরেজমিনে জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুপার হোসনে আরা বেগম পিটিআই চত্বরে সরকারী কোয়াটর/হোষ্টেলে বসবাস করলেও তিনি ২০২২-২৩ অর্থবৎসরে বাড়ি ভাড়া বাবদ দুই লাখ ৭১ হাজার ৮শ ২৮টাকা ৭৮পয়সা এবং ২০২৩-২৪ অর্থ বৎসরে ডিসেম্বর/২৩ পর্যন্ত এক লাখ ৩৯হাজার ৬শ ১টাকা বাড়ি ভাড়া কর্তন না করে নিয়ম বহিভূত ভাবে টাকা উত্তোলণ করে নিজেই আত্মসাত করছেন, যেন দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে পিটিআই সুপার হোসনে আরা বেগম এর কাছে তার অনিয়ম দূর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে তা অস্বীকার করেন। তবে সরকারী ভবনে বসবাস করে বাড়ি ভাড়া কর্তন না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
Leave a Reply