স্টাফ রিপোর্টর ॥
জামালপুরে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার হওয়া ০৪ জন আসামী-কে ০১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত। গত রোববার উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিজ্ঞ মামলা আমলে নেওয়ার জি.আর. সদর আদালত, জামালপুরের ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মাহমুদা আক্তার এ আদেশ প্রদান করেন।
আসামীরা হলেন, মোঃ মোশারফ হোসেন(৪৫), মোঃ বিপ্লব(৩৫), মোঃ মজনু খান(৪৫) এবং মোঃ নূর ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জামালপুর জজ কোর্টের আইনজীবী মো: মোতাকাব্বির হোসাইন-এর হেফাজত হইতে তাহার মোয়াক্কেল মোঃ লাইসুর রহমান-কে অপহরণ করে গ্রেফতার হওয়া ওই ৪ জন সহ অন্তত ১৫/১৬ জন আসামী। গত বুধবার ১০ জানুয়ারী বিকাল অনুমান ০৪.৫০ ঘটিকার সময় জামালপুর শহরের সকাল বাজারস্থ ইসলামী ব্যাংক এটিএম বুথের সামনে পাকা রাস্তার উপর এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় অপহৃতের মাতা মোছাঃ নারগিছ বেগম জামালপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। যাহার নং : ৬৪২, তারিখ : ১০/০১/২০২৪ইং। পরবর্তীতে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোঃ মোশারফ হোসেন(৪৫), মোঃ বিপ্লব(৩৫), মোঃ মজনু খান(৪৫) এবং মোঃ নূর ইসলাম-কে গ্রেফতার করে জামালপুর থানা পুলিশ। এছাড়াও গ্রেফতার হওয়া আসামীগণের হেফাজত হইতে অপহৃত মোঃ লাইসুর রহমান পুলিশ উদ্ধার করিয়া জামালপুর আদালতে সোপর্দ করিয়াছে। বিজ্ঞ আদালত অপহৃত মোঃ লাইসুর রহমানের জবানবন্দি গ্রহণ করিয়া তাহার নিজ জিম্মায় মুক্তি প্রদান করেন। মোঃ লাইসুর রহমান ঠাকুরগাও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা গ্রামের মোঃ আঃ আলিম পুত্র।
ওই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার অপহৃতের মাতা মোছাঃ নারগিছ বেগম বাদী হইয়া গ্রেফতার হওয়া আসামীসহ ১০ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত ৫/৬জন কে আসামী করিয়া জামালপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে।
এদিকে অপহরনের পর উদ্ধার মোঃ লাইসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্ত্রী’র দায়ের করা একটি মামলার আসামী। আমি ওই মামলায় জামিনে আছি। গত ১০ জানুয়ারী বিজ্ঞ আদালতে আমি হাজিরা দিয়ে আমার নিযুক্ত আইনজীবী মো: মোতাকাব্বির হোসাইনের সাথে রিক্সাযোগে তাহার চেম্বারে যাচ্ছিলাম। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোটরসাইলের দিয়ে আসামীগণ জামালপুর শহরের সকাল বাজারস্থ ইসলামী ব্যাংক এটিএম বুথের সামনে পাকা রাস্তার উপর আসিয়া আমাদের রিক্সার গতি রোধ করে এবং জোরপূর্বক আমাকে তাহাদের মোটরসাইকেলে উঠায়। আমার নিযুক্ত আইনজীবী মো: মোতাকাব্বির হোসাইন ওই ঘটনার প্রতিবাদ করিলেও আসামীগণ তাহা কর্ণপাত করে নাই। আসামীগণ আমাকে জোরপূর্বক অপহরণ করিয়া নিয়া কিল ঘুষি মারিয়া একটি ঘরে আটকে রাখে এবং আমাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ০৬(ছয়)টি অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছে ওই আসামীগণ। পরবর্তীতে পুলিশ আমাকে উদ্ধার না করিলে আসামীগণ আমাকে হত্যা করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিতো।
এদিকে, ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর(নিরস্ত্র) মোঃ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানায়, অপহরনের ১০ ঘন্টার মধ্যে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অপহৃত মোঃ লাইসুর রহমান-কে উদ্ধার সহ ওই ঘটনার সাথে জড়িত ০৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ওই আসামীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে ০৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করিলে গত রোববার উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত ওই আসামীদের বিরুদ্ধে ০১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এছাড়াও, ওই মামলা বাদী মোছাঃ নারগিছ বেগম অভিযোগ করিয়া সাংবাদিকদের জানায়, ওই মামলার অন্য আসামীগণ প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করিলেও রহস্যজনক কারণে তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ।
অন্যদিকে, জেলা কারাগারে আটক মোঃ মোশারফ হোসেনের স্ত্রী মোছাঃ শাহিদা পারভীন বাদী হইয়া অপহরনের পর উদ্ধার মোঃ লাইসুর রহমান-এর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনয়ন করিয়া গত শুক্রবার জামালপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
Leave a Reply