কাফি পারভেজ, জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুর শহরের বিসিক শিল্পনগরীর সড়ক নির্মাণ কাজে নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়ম করায় বন্ধ হলো সড়ক নির্মাণ কাজ। অনিয়মের প্রতিবাদ করায় লাঞ্ছিত হয়েছেন কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা বিসিকের এক কর্মকর্তা। ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিসিক শিল্পনগরীর প্রতিষ্ঠান মালিক ও কর্তৃপক্ষ। দরপত্র অনুযায়ী নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার দাবি শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিকদের।
জানা যায়, যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভাল না থাকায় জামালপুর বিসিক শিল্পনগরীতে ১৯৭টি প্লট থাকলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮২টি। এরই ধারাবাহিকতায় জামালপুরসহ ৮ জেলার বিসিক শিল্প নগরীর সড়ক নির্মাণকাজ করছে ঢাকার এম এ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড আরাফাত কন্সট্রাকশন। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে জামালপুর বিসিক নগরীতে ৪ হাজার ৭৮২ বর্গ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণকাজ চলছে। বিসিক শিল্পনগরীতে কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর। গত অর্থবছরে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত কাজের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বিসিক শিল্পনগরীর রাস্তার কাজ নিম্নমানের হচ্ছে এমন অভিযোগে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় বিসিক শিল্পনগরীতে কয়েকজন শ্রমিক সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ করছে। কিন্ত সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন প্রতিনিধি বা প্রকৌশলীকে দেখা যায়নি। সেখানে দেখতে পাওয়া যায় কয়েকজন শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিকদের। তারা কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করলেও তা কর্ণপাত না করে কাজ করতে থাকে শ্রমিকরা।
ড্রেন, রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বালির মধ্যে কার্পেটিং সীল কোট করা, ম্যাকাডাম ঠিক মতো না করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি মঙ্গলবার লাঞ্ছিত হয়েছেন। এরপর প্রতিষ্ঠান মালিকদের প্রতিবাদ ও চাপে বন্ধ রাখা হয় রাস্তার নির্মাণকাজ।
বিসিক শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক খান মিলন বলেন, এই সড়ক দিয়ে সব সময় ১৫ থেকে ৩০ টন মালবাহী গাড়ি যাতায়াত করে। সেক্ষেত্রে এই সড়ক কোনোভাবেই টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে কার্পেটিং কাজ চলছে এবং নিম্ন মানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এসব বিষয় বিসিক কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে এখানে পরিদর্শন করতে এসে শ্রমিকদের কাছে বিসিকের কর্মকর্তারা লাঞ্ছিত এবং অপমান-অপদস্ত হয়।
নির্মাণকাজের ঠিকাদার আরাফাত মোবাইল ফোনে জানান, বিসিকের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। বিসিকের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি কাজে যদি কোনো অনিয়ম থাকে তাহলে শ্রমিকরা সেটি সমাধান করবে। আর যদি বড় ধরনের কোনো অনিয়মের অভিযোগ থাকে তাহলে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
জামালপুর সদর থানার ওসি মুহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন, পুলিশ ঘটনা¯স্থল পরিদর্শন করেছে। সেখানে যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয় এবং কারো কেনো অভিযোগ থাকলে তাদের থানায় অভিযোগ করতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply