জামালপুর প্রতিনিধিঃ বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে নিজ এলাকায় অনেক লোকের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক চক্রের মূল হোতা মানব পাচারকারী গোষ্ঠীর সদস্য হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হুমায়ুন কবির। তার বিরুদ্ধে একই এলাকার বাসিন্দা মোঃ শিপন মিয়া বাদী হয়ে জামালপুর বিজ্ঞ মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইবুনাল -২ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মালার সূত্রে জানা গেছে অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির তার বাড়ী জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ৪নং নাংলা ইউনিয়নের চারাইলদার গ্রামের বাসিন্দা তার পিতার নাম আবু তাহের মানিক। তিনি একজন পেশায় শিক্ষক হলেও তিনি অধিক মুনাফা অর্জনের নিম্মিতে এবং অধিক আর্থিক লাভবানের উদ্দেশ্য বিদেশে উচ্চ বেতনে ভালো চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মানব পাচার করার জন্য কাতারে লোকজন পাঠানোর কথা বলে এলাকায় বেশ কিছু লোকজনদের লোভ লালসার প্রলুব্ধ প্ররোচিত করিয়াএকটি সংঘবদ্ধ মানব পাচার গোষ্ঠী গড়ে তুলে এবং সেই মানব পাচার গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেয় আসামি হুমায়ুন কবির। এই মানব পাচারকারীর হুমায়ুন বিদেশে মানব পাচার করার জন্য লোকজন খুঁজতে থাকে। তিনি মানুষের মাঝে বিশ্বাস জন্মায় যে,টাকা দিলেই ২/১ মাসের মধ্যেই কাতারে আমরা লোক পাঠাইতে পারি।এমন প্রলোভনের শিকার হয়ে একই এলাকার একই গ্রামের বাসিন্দা খবিজল আকন্দের ছেলে ভোক্তাভোগী শিপন মিয়া, তিনি সহজ সরল মনে বিশ্বাসে বিদেশে যাওয়ার সন্মতি প্রকাশ করিলে আসামি হুমায়ুন তার নিকট ৫ লক্ষ বিশ হাজার টাকা দাবি করে। উক্ত দাবি মোতাবেক বিগত ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং সালে রোজ শনিবার সময় সকাল আনুমানিক ১০ টার সময় বাদীর বসত বাড়ীতে কতিপয় সাক্ষীদের মোকাবেলায় আসামি হুমায়ুন কে ৫ লক্ষ বিশ হাজার টাকা প্রদান করেন ভোক্তাভোগী মামলার বাদী শিপন মিয়া।পরে শিপন মিয়া কে মামলার ৪নং সাক্ষী ও ৯ নং সাক্ষীদের সাধারণ অভিপ্রায় সাধনেরউদ্দেশ্যে আর্থিক ভাবে লাভবান হইয়া মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে পাচার করার উদ্দেশ্যে আমাদের বুঝিতে না দিয়ে আমাদের ঢাকায় নিয়ে যায়। ঢাকায় নিয়ে আমাদের পাসপোর্ট নিয়ে নেয়। উল্লেখিত পাসপোর্ট নিয়ে বিগত ৯/৪/২০২৪ইং তারিখে আমাকে এবং ৪নং সাক্ষী – ৯ নং সাক্ষীদের বিমানযোগে কাতারে পাঠাইয়া দেয়।আমরা কাতারে যাইয়া দালালের খপ্পরে পড়ি এবং দালালের নামও জানি না। উক্ত দালাল আমাদের চাকুরী না দিয়ে তাদের মনমতো কাতারে স্থানীয় এলাকায় একটি ঘরে আবদ্ধ করিয়া রাখে এবং দিনে ১ বার করিয়া খাবার দেয়। ২/৩ দিন পর পর উক্ত দালাল আমাদের সাথে যোগাযোগ করে। দালালদের চাকুরির কথা বললে দালাল আমাদের জানায় যে,কয়েকদিনের মধ্যে চাকরি হয়ে যাবে। কিন্তুু ৩/৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও উক্ত ঘরের মধ্যে আটককৃত থাকা অবস্থায় অনাহারে দিনাতিপাত করিতে থাকা অবস্থায় চাকুরি না হওয়ায় আমরা কষ্টে দিনাতিপাত করিতে থাকি। অবশেষে আসামির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করিলে আসামি আর আমাদের সাথে যোগাযোগ করে নাই। উক্ত দালালের মাধ্যমে আমরা ১/৮/২০২৪ ইং তারিখে বাংলাদেশে আসিয়া পড়ি। বাংলাদেশে আসিয়া আসামি হুমায়ুনের সাথে যোগাযোগ করি।এমতাবস্থায় আসামি মানব পাচার গোষ্ঠীর সদস্য হইয়া আর্থিক লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্য অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে মানব পাচার অপরাধ সংঘটন করিয়া একে অপরকে প্ররোচনা দিয়া ষড়যন্ত্র করিয়া আমাকে এবং ৪-৯ নং সাক্ষীদের কাতারে পাচার করিয়া উল্লেখিত ধারায় অপরাধ করিয়াছে বিধায় আমি আসামির বিরুদ্ধে অত্র আদালতে অভিযোগ করিলাম। আসামি সংঘবদ্ধ মানব পাচাররের দল নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে বসবাস করতেছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে তাহাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হোক এমন আশাবাদী বিচার প্রার্থী ও সাধারণ মানুষের যাতে করে দেশে মানব পাচার করে প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতে না পারে এমটাই প্রত্যাশা ভোক্তাভোগী পরিবারের ও এলাকার সাধারণ সচেতন মহলের। এ বিষয়ে ভোক্তাভোগী মোঃ শিপন মিয়া বাদী হয়ে জামালপুরে বিজ্ঞ মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইবুনাল -২ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন যার মোকাদ্দমা নং ০৫(১)২০২৪ইং। যাহা বর্তমানে জামালপুরে সিআইডিতে তদন্তধীন আছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত হুমায়ুন জানান, ইতিমধ্যে আমি অনেকের টাকা কিছু ফেরত দিয়েছি। উনি আমার কাছে কখনো টাকা পয়সা ফেরত চাইতে আসে নাই উল্টো তিনি আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের এস,আই আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, তদন্ত কাজ শেষ পর্যায়ে চলছে সঠিক তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply