কাফি পারভেজ, জামালপুর প্রতিনিধি: দুর্নীতির অভিযোগে জামালপুরের বকশিগঞ্জের খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদারকে অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে কলেজে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় শিক্ষক কর্মচারীসহ ৬জন আহত হয়েছেন। রবিবার দুপুরে অধ্যক্ষের লেলিয়ে দেয়া বহিরাগত একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বে”ছাচারিতা, আত্মীয়করণ ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের ঘোরতর অভিযোগ রয়েছে। কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা তাকে অপসারণ ও আইনের আওতায় আনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসছেন।
৫ আগস্ট বিগত আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের পতনের পরও অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার কলেজে স্বপদে বহাল থাকার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছেন। এসব কারণে কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে সরব হয়েছেন। কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে রবিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে। এ সময় অধ্যক্ষ কলেজে উপস্থিত থেকে কর্মবিরতি পালন করা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে অশোভন আচরন করেন। একই সময় তাকে মোবাইল ফোনে বার বার ফোন করতে দেখা যায়। এদিকে কর্মবিরতি পালন শেষে কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা কলেজ ক্যাম্পাসে বসে অধ্যক্ষের বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। এ সময় বেলা সোয়া ১২টার দিকে বহিরাগত একদল লোক আন্দোলনরত শিক্ষক কর্মচারীদের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা লাঠিপেটা করে অন্তত ৬জনকে গুরুতর আহত করেন। একই সাথে হামলাকারীরা কলেজের সকল ক্লাশ থেকে ছাত্রীদের বের করে দেয়।
হামলায় গুরুতররা হলেন, সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল্লাআল মোকাদ্দেস রিপন, সহকারী অধ্যাপক মো. বজলুর রশিদ, সহকারী অধ্যাপক আনিছুজ্জামান, প্রভাষক মো. রুস্তম আলী, উ”চমান সহকারী মো. ইলিয়াস হোসেন, কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো. আব্দুলা আল শাফী লিপন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত মো. আব্দুলা আল শাফী লিপনকে বকশীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতরা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
সহকারী অধ্যাপক মো. বজলুর রশিদ বহিরাগতদের এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদারকে অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলনে আছি। এরই অংশ হিসেবে রবিবার এক ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করি। কর্মবিরতি পালন শেষে আমরা সকল শিক্ষক কর্মচারী পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছিলাম। এ সময় অধ্যক্ষের লেলিয়ে দেয়া বহিরাগত একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। হামলায় আমিসহ অন্তত সাতজন আহত হই। কলেজের অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে এ ধরণের হামলায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। অধ্যক্ষের এহেন কর্মকান্ডে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। এ হামলার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্ষ্টৃান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার বলেন, কলেজে কোনো রকম কর্মবিরতি পালিত হয়নি। আমি এমনিতেই শিক্ষক-কর্মচারীসহ বিভিন্ন মহলের হুমকির মধ্যেও প্রতিদিন কলেজে আসি। রবিবার বহিরাগত একদল লোক কলেজে হামলা চালানোর সময় আমার কক্ষে ছিলাম। শিক্ষক-কর্মচারী কেউ আহত হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। এ সময় আমার কিছু লোকজন আমাকে কলেজ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
Leave a Reply