কাফি পারভেজ, জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুরের মেলান্দহে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) ভিসি-রেজিস্টারসহ ৬ জন এবং দেওয়ানগঞ্জ কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদরাসার অধ্যক্ষ নিজ দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন।
জানা যায়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগের দাবিতে গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে তাদের ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ দাবির প্রেক্ষিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামরুল আলম খান, রেজিস্টার সৈয়দ ফারুক হোসেন, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর-ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক এসএম ইউসুফ আলী, মির্জা আজম হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট ফিশারিজ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক পার্থ সারশী দাশ, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রক্টর সহকারি অধ্যাপক সুমিত কুমার পাল (ফিশারিজ বিভাগ), সমাজকর্ম বিভাগের সহকারি প্রভাষক ও পরিবহন পুলের সদস্য হোসাইন মাহমুদ পদত্যাগ করেন। এ ছাড়াও ডেসপাঁচ রাইডার মনিরুজ্জামান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।
পদত্যাগ পত্রে অধ্যাপক মো. কামরুল আলম খান উল্লেখ করেন, ‘২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর আমাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সে অনুসারে আমি আমার দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্ছচ সচেষ্ট ছিলাম। বর্তমানে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুব আলম পদত্যাগ করার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রবিবার বিকেলে উপাচার্য তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছেন।
এদিকে নিয়োাগ বাণিজ্য, দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের জের ধরে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. মোতালেব হোসেন খান পদত্যাগ করেছেন। সোমবার বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের তোপের মুখে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি এবং ইউএনও বরাবর লিখিত পদত্যাগ পত্র জমা দেন।
পদত্যাগ পত্রে অধ্যক্ষ মো. মোতালেব হোসেন খান উল্লেখ করেন, আমি দীর্ঘদিন হতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করে আসছি, যা চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের কাছে প্রমাণসহ ধরা পড়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র এবং অত্র মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবির প্রেক্ষিতে আজ ১২ আগস্ট আমার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করে স্বে”ছায় পদত্যাগ করলাম। পদত্যাগের বিষয়ে কেউ আমাকে কোন প্রকার চাপ বা ভয়-ভীতি প্রয়োগ করে নাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সোহেল রানা বলেন, অধ্যক্ষ মো. মোতালেব হোসেন খানের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ তছরুপ, অতিরিক্ত ফি আদায়, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের দাবির মুখে নিজের দুর্নীতির কথা স্বীকার করে তিনি স্বে”ছায় পদত্যাগ করেছেন।
মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আমির হোসেন মুরাদ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দাবির মুখে অধ্যক্ষ মো. মোতালেব হোসেন খান পদত্যাগে বাধ্য হন।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, দেওয়ানগঞ্জ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মোতালেব হোসেন খানের পদ্যতাগের বিষয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার কাছে মোবাইল মারফত জানতে পেরেছি।
Leave a Reply