কাফি পারভেজ, জামালপুর প্রতিনিধি:
মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর চর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৪টির মধ্যে ১৬টি ঘরেই তালা ঝুলছে। অনেকের জায়গাজমি থাকলেও নিজেকে ভূমিহীন দেখিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে নিয়েছেন এসব ঘর।
জানা যায়, ফসলি মাঠের পাশে ‘২ নম্বর চর আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের অবস্থান। ২০২০-২১ অর্থবছরে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের আওতায় প্রকল্পটিতে প্রতিটিতে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৪টি ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ঘরে রয়েছে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর ও একটি শৌচাগার। রয়েছে বিদ্যুৎ আর সুপেয় পানির ব্যবস্থা। নির্মাণের কয়েক মাসের মধ্যে দুই শতক জমিসহ ঘরগুলো বাসিন্দাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
ওই আশ্রয় প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘরেই তালা ঝুলছে। ঝোপঝাড়ে ঘিরে ধরেছে ফাঁকা ঘরগুলো। বারান্দা ও আশপাশে জমে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। কয়েকটি ঘরের বারান্দায় গবাদিপশু এবং ঘরের মধ্যে পাটখড়ি রাখা রয়েছে। কোনো কোনো ঘরের উঠানে মাড়াই করা ভুট্টার গাছ শুকানো হচ্ছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৪টি মধ্যে ১৬ জন এসব ঘরে থাকেন না। কারণ, তাঁদের নিজের ঘরবাড়ি থাকায় তাঁরা সেখানেই থাকেন। প্রকল্পের ঘরগুলো তালা লাগিয়ে রেখেছেন। যাঁরা ঘরে থাকেন না তাঁরা হলেন রাজ্জাক মিয়া, শফিকুল ইসলাম, সবুজা বেগম, আয়নাল হক, নওশাদ আলী, সাবান আলী, ফাতেমা বেগম, জয়গুন বেগম, খলিল মিয়া, বিল্লাল হোসেন, আড়ং আলী, নওশাদ আলী, কামাল হোসেন, গেন্দা মিয়া, রাবিয়া বেগম ও আহাদ আলী।
খলিল মিয়ারও নিজের টিনশেড ঘর রয়েছে। প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ সম্পর্কে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
প্রকল্পের বাসিন্দা মো. হবি মিয়া বলেন, ২৪টি মধ্যে আটটি ঘরে আমরা বসবাস করছি। যাঁদের জমিঘর আছে, তাঁরাও এখানে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। তাঁরা এখানে অনেকেই থাকে না। যখন সরকারি কোনো লোকজন আসার খবর পান, তখন ওই সব লোক ঘর খোলেন।
শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সায়েদুর রহমান জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের সঙ্গে ইউপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এসব ঘর ইউএনওদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের থেকে ইউএনওরাই ভালো বলতে পারবেন।
মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবা হক বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply